মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান আহবানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক ড.বদিউল আলম মজুমদার এ মন্তব্য করেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। এজন্য তারা বিষ্মিত ও শঙ্কিত। এ সঙ্কা আমরা অনেক আগের থেকেই করছি। তার প্রায় অনেকগুলো ইতোমধ্যে ঘটতে শুরু করেছে। নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী দেওয়ার কারণে প্রার্থীর সংখ্যা কমে গেছে যা আগে কখনও এমনটি হয়নি। আর যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চায় তারাও প্রার্থী হতে পারছে না রাজনৈতিক দলের লোকজনের প্রভাবে।
তিনি বলেন, জনগণ পৌর নির্বাচনে যেমন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেনাই। তেমনি ইউপি নির্বাচনেও সুষ্ঠুভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে না। এ কারণে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। এজন্য অনেকে ভোটকেন্দ্রেও যাবেনা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যেহেতু, এ বছর দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে সেহেতু সাধারণ প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। আর এ ভাবে চলতে থাকলে স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে যাবে। স্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে। গণতন্ত্র ভেঙ্গে, যাবে অপশক্তির উদয় হবে যা জনগণে জন্য অশুভ ও অকল্যাণ বয়ে আনবে। আর এ গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে রাজনৈতিক নেতাদের ও নির্বাচন কমিশনকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২৫টি ইউনিয়নে শুধু ক্ষমতাসীনরা একক ভাবে মনোনয়ন দাখিল করেছে। এসব জায়গায় অন্যান্য দলের বা স¦তন্ত্র প্রার্থীদের ভয় ভীতি দেখিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি। কোন কোন জায়গায় অনেককে আবার অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাই নির্বাচন শুরুর আগেই ক্ষমতাসীন দলের ২৫ প্রার্থীর জয় লাভের যে ইঙ্গিত বহন করে এটা কমিশনের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই হতে পরে না।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে যে সকল অভিযোগ উঠেছে সেগুলো হলো- মনোনয়ন বাণিজ্য, মনোনয়ন দাখিলে বাধাদান ও ছিনিয়ে নেওয়া, অর্থের বিনিময়ে প্রর্থীতা বাতিল বা বৈধকরণ, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা বা প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য প্রার্থীকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও মারধর করা, দৃশ্যমান অনিয়ম এমন কী অভিযোগ দায়েরের পরেও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ব্যবস্থা না নেওয়া, এক ইউনিয়নে একটি রাজনৈতিক দল থেকে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী বসগুলো বাতিল না কারা কমিশনের চরম অনিহা ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া বর্তমানে নির্বাচন করার মতো লেভেল প্লেইং ফিল্ড ঠিক নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাই এ নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়, অযোগ্য। কারণ তারা বার বার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে এত কিছু ঘটছে নির্বাচন কমিশন তা দখছে না। কমিশন বলছে, অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা যদি সচেতন থাকত তালে এতো কিছু কখনও ঘটত না। তিনি এও বলেন, সরকার কমিশনকে অনেক ক্ষমতা দিয়েছে। সে ক্ষমতা তারা যদি প্রয়োগ করতে না পারে তাহলে তাদের ব্যর্থতা। তাই দেশের ও জনগণের স্বার্থে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনকে কাজ রকার আহবান জানান এই সাবেক কর্মকর্তা।